Programming

ভূমিকা:

বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর সমাজে প্রোগ্রামিং একটি অপরিহার্য দক্ষতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রোগ্রামিং ভাষার মাধ্যমে আমরা যন্ত্রকে আমাদের ইচ্ছামত কাজ করাতে পারি, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে। প্রোগ্রামিং এর সাহায্যে কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেট, স্মার্টওয়াচ সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরিচালিত হয়। এই প্রবন্ধে আমরা ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা, প্রোগ্রামিং ভাষার রীতিনীতি, বাইনারি সংখ্যা, মেশিন কোড, কম্পাইলার, ইন্টারপ্রেটার, স্টেটমেন্ট, পাইথন এবং পাইথন ইনস্টলেশন ও প্রোগ্রাম লেখা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করব।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস:

ইলেকট্রনিক ডিভাইস হল সেই যন্ত্রগুলো যা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে। উদাহরণস্বরূপ, কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, স্মার্টওয়াচ, এবং আরও অনেক ইলেকট্রনিক ডিভাইস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ডিভাইসগুলোতে থাকা মাইক্রোপ্রসেসর এবং অন্যান্য হার্ডওয়্যার উপাদান প্রোগ্রামিং কোডের সাহায্যে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর ভেতরে থাকা মাইক্রোপ্রসেসরগুলো প্রোগ্রামিং কোডের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসর প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা কোডকে মেশিন কোডে রূপান্তরিত করে এবং সেই মেশিন কোড অনুসারে কাজ সম্পাদন করে। ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রোগ্রামিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রোগ্রামিং ভাষা (Programing Language):

প্রোগ্রামিং ভাষা হল সেই মাধ্যম যার সাহায্যে আমরা কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করি এবং তাকে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার নির্দেশ দেই। প্রোগ্রামিং ভাষার মাধ্যমে কম্পিউটারকে নির্দিষ্ট কাজ করতে বলা হয়, যেমন গণনা করা, ডেটা প্রসেস করা, বা গ্রাফিক্স তৈরি করা। বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু জনপ্রিয় ভাষা হল পাইথন, জাভা, সি, সি++, জাভাস্ক্রিপ্ট, রুবি ইত্যাদি।

প্রোগ্রামিং ভাষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হল এর সিনট্যাক্স এবং সেম্যান্টিক্স। সিনট্যাক্স হল ভাষার গঠন এবং নিয়মাবলী, যা বলে দেয় কীভাবে ভাষার বিভিন্ন উপাদানগুলো একত্রিত হবে। সেম্যান্টিক্স হল ভাষার অর্থ বা মানে, যা বলে দেয় সেই ভাষার বিভিন্ন স্টেটমেন্ট বা কমান্ডের মানে কী।

উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষার প্রধান সুবিধা হল এটি মানব পাঠযোগ্য, যা প্রোগ্রামারদের জন্য কোড লেখা এবং বুঝা সহজ করে। উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষার উদাহরণ হিসেবে পাইথন একটি উল্লেখযোগ্য ভাষা, যা সহজবোধ্য সিনট্যাক্স এবং ব্যাপক লাইব্রেরি সমর্থনের জন্য জনপ্রিয়।

প্রোগ্রামিং ভাষার রীতিনীতি:

প্রোগ্রামিং ভাষার রীতিনীতি হল সেই নিয়মাবলী এবং স্ট্যান্ডার্ড যার মাধ্যমে প্রোগ্রামিং কোড লেখা হয়। প্রোগ্রামিং রীতিনীতি মেনে কোড লিখলে কোডটি আরও পাঠযোগ্য, সহজবোধ্য এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ হয়। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রীতিনীতি হল:

ইন্ডেন্টেশন: ইন্ডেন্টেশন হল কোডের বিভিন্ন অংশকে সঠিকভাবে সংগঠিত করার পদ্ধতি। সঠিক ইন্ডেন্টেশন প্রোগ্রামারদের কোডের কাঠামো সহজে বুঝতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, পাইথনে ইন্ডেন্টেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি কোডের ব্লক চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।

ভ্যারিয়েবল নামকরণ: ভ্যারিয়েবল নামকরণে যথাযথ নিয়মাবলী অনুসরণ করা উচিত। ভ্যারিয়েবল নামগুলো হতে হবে অর্থবহ এবং স্বজ্ঞাত, যাতে ভ্যারিয়েবলটির কাজ বোঝা যায়। উদাহরণস্বরূপ, total_amount নামের ভ্যারিয়েবল থেকে বোঝা যায় এটি মোট অর্থের মান ধারণ করে।

কমেন্টিং: কোডে কমেন্টিং করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমেন্টের মাধ্যমে কোডের বিভিন্ন অংশের ব্যাখ্যা দেয়া হয়, যা অন্য প্রোগ্রামারদের কোডটি বুঝতে সাহায্য করে। কমেন্টগুলো সাধারণত # চিহ্ন দিয়ে শুরু হয়।

ফাংশন ও মডুলার প্রোগ্রামিং: বড় প্রোগ্রামকে ছোট ছোট ফাংশনে বিভক্ত করা উচিত। প্রতিটি ফাংশন নির্দিষ্ট একটি কাজ সম্পাদন করবে। এটি কোডের পুনঃব্যবহারযোগ্যতা বাড়ায় এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ করে।

বাইনারি সংখ্যা ও সংখ্যা পদ্ধতি:

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি একটি মৌলিক সংখ্যা পদ্ধতি । যা ০ এবং ১ এর সমন্বয়ে গঠিত একটি সংখ্যা পদ্ধতি। বাইনারি শব্দটি ল্যাটিন শব্দ “বিনারি” থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার অর্থ “দুই দ্বারা গঠিত”। এই সংখ্যা পদ্ধতিতে শুধুমাত্র দুটি ডিজিট রয়েছে, ০ এবং ১। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে জটিল গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব হয়।

এটি ‘বেস-২’ সংখ্যা পদ্ধতি নামেও পরিচিত। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিজিটাল সিস্টেমের জন্য মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কম্পিউটার শুধুমাত্র দুটি অবস্থা বুঝতে পারে: On(১) এবং Off(০)। এই দুটি অবস্থার সাহায্যে সমস্ত তথ্য বাইনারি আকারে উপস্থাপন করা হয়।

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করা যায় যেমন টেক্সট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি। প্রতিটি ডেটা একটি নির্দিষ্ট বিন্যাসে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরিত হয় এবং তারপর কম্পিউটারের মেমোরিতে সংরক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, “A” অক্ষরটি ASCII কোড অনুযায়ী বাইনারি সংখ্যায় “01000001” দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়।

বাইনারি যোগ করার নিয়মঃ

বাইনারি যোগফল করার সময় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়, যা দশমিক যোগফলের নিয়মের মতই সরল, কিন্তু ভিন্ন।

বাইনারি যোগের মৌলিক নিয়ম

  1. 0+0=0

  2. 0+1=1

  3. 1+0=1

  4. 1+1=10 (যেখানে ০ থাকে এবং ক্যারি হিসাবে ১ যোগ হয়)

উদাহরণ ১: সাধারণ বাইনারি যোগফল

ধরা যাক আমাদের দুটি বাইনারি সংখ্যা যোগ করতে হবে: ১০১ এবং ১১০।

Binary Addition

প্রথম কলামে: ১ + ০ = ১

দ্বিতীয় কলামে: ০ + ১ = ১

তৃতীয় কলামে: ১ + ১ = ১০ (০ লিখে, ক্যারি ১)

উদাহরণ ২: ক্যারি সহ বাইনারি যোগফল

ধরা যাক আমাদের দুটি বাইনারি সংখ্যা যোগ করতে হবে: ১১০১ এবং ১০১১।

Binary Addition Carry

প্রথম কলামে: ১ + ১ = ১০ (০ লিখে, ক্যারি ১)

দ্বিতীয় কলামে: ০ + ১ + ক্যারি ১ = ১০ (০ লিখে, ক্যারি ১)

তৃতীয় কলামে: ১ + ০ + ক্যারি ১ = ১০ (০ লিখে, ক্যারি ১)

চতুর্থ কলামে: ১ + ১ + ক্যারি ১ = ১১ (১ লিখে, ক্যারি ১)

সবশেষে ক্যারি ১ যুক্ত করে পাওয়া যায় ১১০০০।

বাইনারি যোগফল প্রক্রিয়াটি সহজ হলেও এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কম্পিউটারের সকল গাণিতিক কাজ এই নিয়ম অনুসারে সম্পাদিত হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ও যোগফল করার নিয়ম আমাদেরকে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বুঝতে সহায়ক হয়, যা প্রযুক্তির উন্নয়নের মূল ভিত্তি।

মেশিন কোড:

মেশিন কোড হল বাইনারি সংখ্যা দিয়ে লিখিত প্রোগ্রাম যা সরাসরি কম্পিউটার হার্ডওয়্যার দ্বারা সম্পাদিত হয়। উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষার কোডকে প্রথমে কম্পাইলার বা ইন্টারপ্রেটার এর মাধ্যমে মেশিন কোডে রূপান্তরিত করা হয়, তারপর কম্পিউটার সেই মেশিন কোড অনুসারে কাজ সম্পাদন করে।

মেশিন কোড সরাসরি কম্পিউটারের প্রসেসর দ্বারা সম্পাদিত হয় এবং এটি হার্ডওয়্যার নির্দিষ্ট। অর্থাৎ, একটি কম্পিউটারের মেশিন কোড অন্য কম্পিউটারের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, যদি না উভয় কম্পিউটারের প্রসেসর একই ধরণের হয়। মেশিন কোড সাধারণত সরাসরি লেখা হয় না কারণ এটি খুবই জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। তাই উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার করা হয় এবং সেই ভাষা থেকে মেশিন কোডে রূপান্তর করা হয়।

প্রোগ্রামিং ভাষার শ্রেণীবিভাগ:

প্রোগ্রামিং ভাষা বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত করা যায়, যা নিম্ন স্তরের ভাষা (Low-Level Language), মধ্যম স্তরের ভাষা (Mid-Level Language), এবং উচ্চ স্তরের ভাষা (High-Level Language) নামে পরিচিত।

নিম্ন স্তরের ভাষা (Low-Level Language):

নিম্ন স্তরের ভাষা হল মেশিন ভাষা এবং অ্যাসেম্বলি ভাষা। মেশিন ভাষা সরাসরি বাইনারি কোডে লেখা হয় যা কম্পিউটারের প্রসেসর দ্বারা সরাসরি সম্পাদিত হয়। অ্যাসেম্বলি ভাষা কিছুটা মানব পাঠযোগ্য হয়, কিন্তু এটি এখনও নিম্ন স্তরের এবং সরাসরি হার্ডওয়্যার পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, মেশিন কোড এবং অ্যাসেম্বলি ভাষা দুটি নিম্ন স্তরের ভাষা।

মধ্যম স্তরের ভাষা (Mid-Level Language):

মধ্যম স্তরের ভাষা হল সেই ভাষা যা নিম্ন এবং উচ্চ স্তরের ভাষার মধ্যে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই ভাষাগুলো সরাসরি হার্ডওয়্যার পরিচালনা করতে পারে আবার উচ্চ স্তরের ভাষার সুবিধাও প্রদান করে। সি প্রোগ্রামিং ভাষা মধ্যম স্তরের ভাষার একটি উদাহরণ।

উচ্চ স্তরের ভাষা (High-Level Language):

উচ্চ স্তরের ভাষা হল সেই ভাষা যা মানব পাঠযোগ্য এবং কম্পিউটার কোড লেখাকে সহজ করে। এই ভাষাগুলো উচ্চ স্তরের অ্যাবস্ট্রাকশন প্রদান করে, যার ফলে প্রোগ্রামারদের জন্য কোড লেখা এবং বুঝা সহজ হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাইথন, জাভা, সি++ ইত্যাদি উচ্চ স্তরের ভাষা।

কম্পাইলার ও ইন্টারপ্রেটার:

কম্পাইলার এবং ইন্টারপ্রেটার হল দুটি প্রধান প্রোগ্রামিং টুল যা উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামিং ভাষাকে মেশিন কোডে রূপান্তরিত করে।

কম্পাইলার: কম্পাইলার একটি প্রোগ্রাম যা পুরো প্রোগ্রাম কোড একবারে পড়ে এবং মেশিন কোডে রূপান্তরিত করে। এর ফলে একটি এক্সিকিউটেবল ফাইল তৈরি হয় যা পরবর্তীতে কম্পিউটারে রান করা যায়। কম্পাইলারের উদাহরণ হল জাভা কম্পাইলার, সি কম্পাইলার ইত্যাদি।

ইন্টারপ্রেটার: ইন্টারপ্রেটার একটি প্রোগ্রাম যা প্রোগ্রাম কোড লাইন বাই লাইন পড়ে এবং সাথে সাথে এক্সিকিউট করে। এটি পুরো প্রোগ্রাম একবারে মেশিন কোডে রূপান্তরিত করে না, বরং প্রতিটি লাইনের জন্য পৃথকভাবে কাজ করে। ইন্টারপ্রেটারের উদাহরণ হল পাইথন ইন্টারপ্রেটার, রুবি ইন্টারপ্রেটার ইত্যাদি।

কম্পাইলার এবং ইন্টারপ্রেটারের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল তাদের কাজের পদ্ধতিতে। কম্পাইলার পুরো প্রোগ্রাম একবারে রূপান্তরিত করে, যেখানে ইন্টারপ্রেটার লাইন বাই লাইন কাজ করে। কম্পাইলার দ্রুত এক্সিকিউশন প্রদান করে, কিন্তু ত্রুটি সনাক্ত করা কঠিন হতে পারে। অন্যদিকে, ইন্টারপ্রেটার ধীর এক্সিকিউশন প্রদান করে, কিন্তু ত্রুটি সনাক্ত করা সহজ।

স্টেটমেন্ট:

প্রোগ্রামিং ভাষার স্টেটমেন্ট হল সেই একক নির্দেশনা যা প্রোগ্রামের নির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করে। প্রতিটি স্টেটমেন্ট নির্দিষ্ট একটি কাজ নির্দেশ করে যেমন একটি ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করা, একটি মান অ্যাসাইন করা, বা একটি লুপ শুরু করা। স্টেটমেন্টগুলো প্রোগ্রামের লজিক এবং কার্যক্রম গঠনে সহায়ক হয়।

উদাহরণস্বরূপ, পাইথন ভাষায় একটি সাধারণ স্টেটমেন্ট হতে পারে:

Statement

এখানে a = 10 স্টেটমেন্টটি ভ্যারিয়েবল a কে ১০ মান অ্যাসাইন করে, এবং print(a) স্টেটমেন্টটি সেই মানকে প্রিন্ট করে।

স্টেটমেন্টগুলো শর্তাধীন হতে পারে, যেমন if স্টেটমেন্ট, যা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ হলে কার্যকর হয়:

if statement

পাইথন:

পাইথন একটি উচ্চ স্তরের, ইন্টারপ্রেটেড প্রোগ্রামিং ভাষা যা তার সহজবোধ্য সিনট্যাক্স এবং পাঠযোগ্যতার জন্য জনপ্রিয়। পাইথন ভাষা প্রথম গুইডো ভ্যান রসাম ১৯৯১ সালে মুক্তি পায়। পাইথন বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য উপযুক্ত, যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, এবং স্ক্রিপ্টিং।

পাইথন ভাষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হল:

সহজবোধ্য সিনট্যাক্স: পাইথনের সিনট্যাক্স সহজ এবং মানব পাঠযোগ্য, যা নতুন প্রোগ্রামারদের জন্য এটি শিখতে সহজ করে।

ব্যাপক লাইব্রেরি সমর্থন: পাইথনের জন্য বিভিন্ন লাইব্রেরি এবং মডিউল উপলব্ধ, যা বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে ব্যবহৃত হয়।

পোর্টেবল এবং ওপেন সোর্স: পাইথন ওপেন সোর্স এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে চলতে সক্ষম, যেমন উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, এবং লিনাক্স।

উদাহরণস্বরূপ, একটি সহজ পাইথন প্রোগ্রাম হতে পারে:

Python Statement

পাইথন ইনস্টলেশন:

পাইথন ইনস্টলেশন খুবই সহজ এবং এটি বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে সমর্থিত। পাইথন ইনস্টল করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:

উইন্ডোজ:

১. python.org ওয়েবসাইট থেকে পাইথন ইন্সটলার ডাউনলোড করুন। ২. ডাউনলোড করা ফাইলটি রান করুন এবং ইনস্টলেশন নির্দেশনা অনুসরণ করুন। ৩. ইনস্টলেশনের সময় “Add Python to PATH” অপশনটি চেক করুন যাতে পাইথন কমান্ড লাইন থেকে অ্যাক্সেসযোগ্য হয়।

ম্যাকওএস:

১. ম্যাকওএসে পাইথন সাধারণত প্রিইন্সটলড থাকে। তবে, সর্বশেষ সংস্করণ পেতে python.org থেকে ডাউনলোড করা যেতে পারে। ২. ইনস্টলার ডাউনলোড করে রান করুন এবং ইনস্টলেশন নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

থনি সফটওয়্যার ব্যবহার

থনি একটি সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব পাইথন আইডিই (ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট) যা নতুন প্রোগ্রামারদের জন্য উপযুক্ত। এটি বিশেষভাবে পাইথন শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এতে ডিবাগিং, ভ্যারিয়েবল এক্সপ্লোরার, এবং স্বয়ংক্রিয় ইন্ডেন্টেশন সহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।

Thony(থনি) ইনস্টলেশন:

১. thonny.org থেকে থনি ডাউনলোড করুন। 2. ডাউনলোড করা ফাইলটি রান করুন এবং ইনস্টলেশন নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

থনি ব্যবহার করে প্রথম প্রোগ্রাম:

১. থনি চালু করুন এবং নতুন ফাইল তৈরি করুন।

২. নিচের কোডটি লিখুন:

Python Statement

৩. Run বাটনটি ক্লিক করুন অথবা F5 চাপুন। ৪. আউটপুট উইন্ডোতে “Hello, World!” প্রদর্শিত হবে।

থনি আইডিই ব্যবহার করে প্রোগ্রাম লেখা এবং ডিবাগ করা সহজ, যা নতুন প্রোগ্রামারদের জন্য প্রোগ্রামিং শেখার প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।

চলো এবার কিছু সমস্যার সমাধান করি:

উপসংহার:

প্রোগ্রামিং জগতে প্রবেশ করা এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে। এই প্রবন্ধে আমরা ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং ভাষা, প্রোগ্রামিং ভাষার রীতিনীতি, বাইনারি সংখ্যা, মেশিন কোড, কম্পাইলার, ইন্টারপ্রেটার, স্টেটমেন্ট, পাইথন এবং থনি সফটওয়্যার ব্যবহার সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। প্রোগ্রামিং শেখা একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া, যা সময় এবং অনুশীলন প্রয়োজন। তবে, একবার এই দক্ষতা আয়ত্ত করলে এটি অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। প্রোগ্রামিং শেখার মাধ্যমে আমরা আমাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারি এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে পারি।

 

1 Comment

Leave a Comment