Sabotage

সেদিন এক ছোট ভাই এসেছিল বিসিএস প্রিলির পড়ালেখার ব্যাপারে জানতে। তাকে বই এর লিস্ট দিলাম,কীভাবে পড়তে হবে বলতেই জানিয়ে দিল – “ভাই, আমি আপনার মত এত ব্রিলিয়ান্ট না, আমার দ্বারা হবে না এসব। আমি ছোট একটা বেসরকারি চাকরিতে ঢুকে যাব ” এটাকেই বলা হয় সেল্ফ স্যাবোটাজ। সে নিজে খাটবে না তাই আমাকে ব্রিলিয়ান্ট বলে দায় এড়ালো। অথচ সে কী জানে প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা বাইরে ছাত্র পড়িয়ে এসেও আমি পড়ি। আমি যে ভোর ৫ টার আগে ঘুমাই না এসব কী সে জানে?  অথচ তার কোন রেসপন্সিবিলিটি নেই। সে ভালভাবে পড়ালেখা করলে হওয়ার কথা এক চান্স এ। কিন্তু না! সে আমাকে দেবতার আসনে বসাল, আমার হার্ড ওয়ার্ক কে ডিনাই করল আর নিজের দায় সারল।

এরকম ভুল করেছিলাম ভার্সিটিতে। আমরা বলতাম – “আমার এত মুখস্থ ভালো লাগে না, আমি ওর মত অত মেধাবি না, আমার প্যাশন নেই “। সিস্টেমের দোষ ধরে নিজেকে হ্যাডা ভাবতাম। অথচ গরীবের বাচ্চার প্যাশন থাকার কথাও না। পড়ালেখাটা আমাদের জন্য ওষুধের মত। একই সিলেবাস পড়ে  আমার বন্ধু তো ঠিক ই ভাল করল। আমরা পারলাম না কেন?  কেননা সেল্ফ স্যাবোটাজ। অথচ একই ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই আমরা চান্স পেয়েছিলাম। মেধায় পার্থক্য থাকতেই পারে কিন্তু তা আকাশসম তো নয়।

পাব্লিক ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পরেই আমাদের অনেকের পাখনা গজায়। আমরা নিজেদের বিশাল কিছু ভাবি। তখন নিজেকে বাদ দিয়ে আমরা দেশ উদ্ধার এর কথা ভাবি। কেউ বিপ্লবী হয়, কেউ হয় কমিউনিস্ট। আমরা এমন ভাবে থাকি যেন এই ভার্সিটি লাইফ আর শেষ হবে না। আমরা ভুলে যাই আমাদের স্ট্যাটাস। কারণ, তখন আমাদের পা আর মাটিতে থাকে না। এরপর পাস করে মারা খেয়ে আবার লাইনে ফিরে আসি। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। গরীবের বাচ্চার জীবনে সুযোগ আসলে বার বার আসে না। মারজিন অফ ইরোর অনেক কম। অপূরণীয় ক্ষতি হয়েই যায়! আর সিস্টেম ফলো করাটাই আমাদের নিয়তি, দোষ ধরাটা নয়। জানি না ফেসবুকের এই বাহারি দুনিয়া দেখে তোমার কী মনে হয় কিন্তু আসল কথা হল আমরা খুব ই ক্ষুদ্র মানুষ। সিস্টেম কে অন্ধভাবে ফলো করার মাঝেই আমাদের সারভাইভাল এর বীজ নিহিত। তাই, আমাদের অনেক খাটতে হবে। খাটতে খাটতে মরে গেলেও সমস্যা নাই। এমনিতেই আমাদের জীবনে একচুয়ালি তেমন কিছু নাই। কারণ, একটা সময় পর খাটলেও আর লাভ হবে না। তখন আমরাও আমাদের আগের প্রজন্মের মত লাইফলেস হয়ে পড়ে থাকব। সরণ হবে ০ ৩০ বছর বয়সের  মধ্যে এইদেশে কিছু না করতে পারলে নিজেকেই আয়নায় দেখে বলব – “শাউয়ো “

Rupom Rahman এর id থেকে সংগৃহীত

Leave a Comment